আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকা আবশ্যিক পুষ্টি সমূহের ঘাটতি পূরনের জন্য আমরা ফুড সাপ্লিমেন্ট অথবা ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট নামক এই উপাদানটি ব্যবহার করতে পারি। এটি সাধারনত ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন, অ্যামাইনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ একপ্রকার হর্মোনাল প্রাকৃতিক উপাদান এবং আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যন্য উপাদান এর মিশ্রন। বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশেই এই ফুড সাপ্লিমেন্ট কিংবা ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট এর ব্যবহার বা সেবন অনেক পরিমানে বেড়ে চলছে।
ফুড সাপ্লিমেন্ট এর বেশুকছু ধরন রয়েছে, যা আলাদা আলাদা ভাবে নির্দিষ্ট কিছু উপকারীতা বহন করে
১। ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট : এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি উপাদানের মিশ্রন। এই ধরনের সাপ্লিমেন্টে ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি উপাদানের মিশ্রন থাকে। যা শারীরিক বৃদ্ধি, হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নয়ন ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহযোগিতা করে থাকে।
২।প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট: শরীরের পেশী ত্যরী এবং মেরামতে সাহায্য করে থাকে এই প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট।
এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট বিশেষ করে খেলোয়ারদের মধ্যে ও যারা নিয়মিত শরীর চর্চা করেন তাদের জন্য বেশ উপকারী একটা সাপ্লিমেন্ট হলো প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট।
৩। অ্যামাইনো অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট:
এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট শরীরের শক্তি বাড়াতে এবং পেশি পুনর্গঠন করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
৪। ফ্যাটি অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট:
হ্রদরোগ প্রতিরোধে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারীতা বাড়াতে ফ্যাটি অ্যাসিড গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখে। এই ধরনের সাপ্লিমেন্টকে আবার অ্যোমেগা-০৩ ও বলা হয়ে থাকে।
৫। হারবাল বা পাকৃতিক সাপ্লিমেন্ট: উদ্ভিদ (যেমন: গিনসেং, গল্ডেনসিল, হরতকি ইত্যাদি) থেকে প্রস্তুতকৃত উপাদানসমূহ হারবাল বা পাকৃতিক সাপ্লিমেন্ট নামে পরিচিত।
৬। ফাইবার সাপ্লিমেন্ট: এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট সাধরনত খুব একটা বেশি মানুষ ব্যবহার করে না তবে এটি পরিপাকতন্তের স্বাস্থ্য রক্ষ্ায় বেশ কার্যকরী ভুমিকা রাখে।
এবার আসি ফুড সাপ্লিমেন্ট কিংবা ডায়েটারি সাপ্লিমেন্টের উপকারিতা সম্পর্কে কিছু বলি
এই উপাদানগুলোর অনেক ধরনের উপকারীতা থাকতে পারে বিশেষ করে যদি এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট সমূহকে ব্যাক্তির প্রয়োজনী পুষ্টি উপাদান দিয়ে তৈরী করা হয়। নিম্নে এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট এর বেশ কিছু প্রধান উপকারীতা তুলে ধরা হলো।
১। পুষ্টির ঘাটতি পূরন: আপনার প্রতিদিনের গ্রহন করা খাবারের মধ্যে যদি নির্দিষ্ট কোন পুষ্টির অভাব থাকে তাহলে সাপ্লিমেন্ট এর ব্যবহারে ওই নির্দিষ্ট পুষ্টির ঘাটতি পূরন করতে সক্ষম হবেন।
২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো: প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিডে এবং অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৩।শক্তি এবং পেশি বৃদ্ধি: প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট আপনার শরীরকে শক্তিশালী এবং প্রানবন্ত রাখার পাশাপাশি আপনার পেশি ও মাসাল বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে।
৪। হাড়ের স্বাস্থ্য: ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট আপনার হাড়ের ঘনত্ব এবং হাড়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে।
৫। চিন্তা ও মানষিক চাপ কমানো: কিছু কিছৃ হারবাল সাপ্লিমেন্ট যেমন ম্যাগনেসিয়াম বা গিনসেং মানসিক শান্তি ও মনোযোগ বাড়াতে সহযোগিতা করে।
সতর্কতাঃ
সবশেষে সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের কিছৃ বিশেষ সতর্কতা সম্পর্কে জানা যাক। এই সতর্কতা সমূহ না মেনে সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা হলে আপনি মারাত্মক স্বাস্থঝুকিতে পড়তে পারেন যার ফলে আপনার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট গ্রহন:
অধিক মাত্রায় সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করলে এর ফল সরুপ শরীরে বিষক্রিয়া বা টক্সিক প্রতিক্রিয়া দেকা দিতে পারে।
প্রাকৃতিক সাপ্লিমেন্ট এর প্রভাব:
কিছু লোক কোন প্রকার পরিক্ষা করা ছাড়াই বিভিন্ন গাছ গাছালির সংমিশ্রন তৈরী করে তা হারবাল সাপ্লিমেন্ট হিসেবে বাজার জাত করে থাকেন। এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারে আপনি উপকারের পরিবর্তে অনেক বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুক্ষিন হতে পারেন।
ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন: কোন নতুন সাপ্লিমেন্ট শুরু করার আগে তা সম্পর্কে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে সেবন করা উচিৎ বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য িএটি অতিব গুরুত্বপূর্ন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ধরনের সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা উচিৎ না।
Post a Comment